নবী ও রাসূল ছাড়া অন্য ব্যক্তির জন্য ‘আলাইহিস সালাম’ বলা যাবে কি না?
Nabi o Rasool chara onno Manusher jonno ‘Alaihis Salam’ bola jabe ki na?
হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু না আলাইহিস সালাম?
হুসাইন “রাযিয়াল্লাহু আনহুর ” পরিবর্তে হুসাইন “আলাইহিস সালাম ” বলার হুকুম
উল্লেখ্য যে, “আলাইহিস সালাম” এর আভিধানিক অর্থ হল “তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক”,
তবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পরিভাষায় “আলাইহিস সালাম” দুআ টি মূলত নবীদের জন্য খাস (নির্দিষ্ট) করা হয়েছে।
তাই এটি শুধু মাত্র নবীদের জন্য ব্যবহার করা উচিত।
তবে নবীগনের সঙ্গে যদি অন্যদের নাম উল্লেখ করা হয় তখন অন্য যেকোনো ব্যক্তির জন্যও এই দুআ টি ব্যবহার করা যেতে পারে।
যেমন নবী ও সাহাবায়ে কেরাম দের কথা বলা হয়েছে এবং তারপর তাদের সবার জন্য “আলাইহিমুস সালাম” বলা হয়, তাতে কোন রকমের সমস্যা নেই।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাতি হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু একজন ছাহাবী ছিলেন,
আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবিঈন দের জন্য নবীদের উল্লেখ করার পর “আলাইহিস সালাম” বলা জায়েজ বা বৈধ।
এছাড়াও, হযরত হুসাইন রাযি আল্লাহু আনহুর নামের সাথে “আলাইহিস সালাম” বলা বিদআতীদের শ্লোগান,
তারা নবী রাসূলদের মত তাঁদেরকে মাসুম-আনিল-খতা (ভুল ত্রুটি থেকে পাক পবিত্র) ও নিস্পাপ বলে বিশ্বাস করে “Alaihis Salam” বলে; তাই এটি পরিহার করা উচিত।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদাহ (বিশ্বাস) এই যে, নবী ও রাসুলদের পরে সর্বোত্তম হল নবীর সাহাবীদের জামায়াত।
আর সাহাবীদের মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ হলেন:
- হযরত আবু বকর সিদ্দীক,
- তারপর হজরত উমর বিন আল-খাত্তাব,
- তারপর হজরত উসমান ইবনে আফ্ফান,
- তারপর হজরত আলী।
(রাযিয়াল্লাহু আনহুম)
সকল সাহাবীকে ভালোবাসা ওয়াজিব এবং তাদের বিদ্বেষ করা হারাম।
সাহাবায়ে কেরাম নবী রাসূলদের মত মাসুম (নিস্পাপ) তো ছিলেন না, কিন্তু তাদেরকে ক্ষমা করা হয়েছে।
হুসাইন “রাযিয়াল্লাহু আনহু” এর পরিবর্তে “আলাইহিস সালাম” বলার হুকুম
উল্লেখ্য যে, কোন বুজুর্গ বা ওলীর নামের সাথে “আলাইহিস সালাম” শব্দটি বলা শরীয়তে নিষিদ্ধ নয়; কেননা “Alaihis Salam” এর অর্থ হল: “তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক”
এবং আমাদের মধ্যে যারা একে অপরকে “আস-সালাম আলাইকুম” বলে সালাম (অভিবাদন) জানায়, এর অর্থও “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক”
তাই শরীয়তের দৃষ্টিতে এটা বলা তো নিষেধ নেই।
তবে আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামাআতের মতে “আলাইহিস সালাম” নবীদের সাথে খাস এবং “রাযিয়াল্লাহু আনহু” শব্দটি সাহাবায়ে কেরামের সাথে বিশেষ।
এবং এটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্যতম আচার।
যে কেউ এর বিরুদ্ধে করে সে আহলে সুন্নাতের আচার-অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে করে।
বহু হাদীস ও ফিকহের কিতাবের মধ্যে সাহাবায়ে কেরাম ও বুজুর্গদের নামের সাথে “আলাইহি সালাম” লেখা আছে আর সেই কিতাব গুলো পড়ার সময় বলতেও কোন সমস্যা নেই।
তবে এই আকীদাহ রেখে মোটেও বলা চলবে না যে সাহাবায়ে কেরাম অথবা হযরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু নবী রাসূলদের মত মাসুম (নিস্পাপ) ছিলেন।
অতএব শিয়া বা বিদআতীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে “আলাইহিস সালাম” না বলায় উচিত।
আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝার ও তার প্রতি আমল করার তৌফিক দান করুন, আমীন।
-:আরো পড়ুন:-
গান বাজনা বাদ্যযন্ত্র ইসলামে হারাম
আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় পাঠক!
আমার নাম মোঃ নাজামুল হক, আমি একটি ইসলামী মাদ্রাসার শিক্ষক।
আমি মাদ্রাসা শিক্ষার পাশাপাশি অনলাইনে ইসলামিক প্রবন্ধ লিখতে থাকি, যাতে মানুষ সঠিক বিষয় জানতে পারে।
আপনি আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন এবং সঠিক তথ্য থেকে উপকৃত হন।
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে বা আমাদের কোন ভুল সম্পর্কে জানাতে চান, তবে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, জাযাকুমুল্লাহু খাইরন।