ফরয ওয়াজিব সুন্নাত মুস্তাহাব হারাম হালাল মাকরূহ মুবাহ এর অর্থ কি?
Foroz Wajib Sunnat Mustahab Haram Halal Makrooh Mubah kake bole?
শরিয়তের হুকুম মূলত দুই প্রকার।
- এক প্রকারকে “মামুরাত” বলা হয়।
- দ্বিতীয় প্রকারকে “মানহিয়্যাত” বলা হয়।
“মামুরাত” শব্দের অর্থ হচ্ছে “আদেশ” (হুকুম) করা।
“মানহিয়্যাত” শব্দের অর্থ হচ্ছে “নিষেদ্ধ” (মানা) করা।
“মামুরাত” হল সেই সকল “আদেশ” (হুকুম) যাতে কোন কাজ “করতে” নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর “মানহিয়্যাত” হল সেই সকল আদেশ (হুকুম) যাতে কোন কাজ “না করার” নির্দেশ দেওয়া হয়।
অর্থাৎ কোন কাজ করতে নিষেধ করা হয়।
তার পর এই আদেশটি “মামুরাত” থেকে হোক বা “মানহিয়্যাত”-থেকে, দর্জা ও মর্যাদার দিক দিয়ে একই স্তর ও একই ধরনের নয়।
বরং একে বিভিন্ন দর্জা (স্তর) ও মারতাবায় (মর্যাদায়) ভাগ করা হয়েছে।
ফরয কাকে বলে?
ফরয: যে কাজ করা খুবই জরুরী, তা না করলে মহাপাপ (অনেক গুনাহ) হয়।
আর এর প্রমাণ পবিত্র কুরআন থেকে হয়।
যে ব্যক্তি ফরয কে অস্বীকার করে সে কাফের হয়ে যায়।
ফরজ আবার দুই প্রকারঃ
- ফরযে আইন
- ফরযে কিফায়াহ
ফরজে আইন বলতে এমন এমন আমল কে বোঝায় যা প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্ক (বিবেকবান) প্রাপ্তবয়স্কদের (বালিগদের) জন্য আদায় করা জরুরি বা অতি আবশ্যক।
যেমন: দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং অনুরূপ অন্যান্য আদেশ (হুকুম) পালন করা।
“ফরযে কিফায়্যাহ” বলতে এমন একটি কাজকে বোঝায় যা একজন বা দুইজন মুসলমান করলে সকল মুসলমান গুনাহ থেকে বেঁচে যায়।
আর যদি একজন ব্যক্তিও তা আদায় না করে তবে সমস্ত মুসলমান গুনাহগার হবে।
যেমন: মৃতদেহকে গোসল দেওয়া এবং তার জানাজা পড়া।
ওয়াজিব কাকে বলে?
ওয়াজিব: সেই কাজকে বলা হয় যে কাজ করা খুবই জরুরী।
আর এর প্রমাণও পবিত্র কুরআন ও হাদিস থেকে পাওয়া যায়।
ফরয ও ওয়াজিব এর মধ্যে পার্থক্য
সুন্নাত কাকে বলে?
সুন্নত: এমন প্রত্যেকটি আমল যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন।
আর এই সুন্নাতের প্রমাণ হাদিস থেকে পাওয়া যায়।
সুন্নাতের অস্বীকারকারী ফাসিক এবং গুনাহগার হয়।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবাদত হিসাবে যেই আমলগুলো (কাজগুলো) করেছেন এবং কখনও কখনও তা ছেড়েও দিয়েছেন তাকে সুন্নাত বলা হয়।
সুন্নত আবার দুই প্রকারঃ-
- সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ
- সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদাহ
সুন্নতে মুয়াক্কাদা এমন সুন্নতকে বলা হয় যা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাগাতার (ধারাবাহিকভাবে) করেছেন।
এবং কোন গুরুতর উযর (অজুহাত) ছাড়া কখনও তা ছেড়ে দেননি।
সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদাহ হল এমন কাজ যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও করেছেন।
এবং কখনো কখনো কোনো বিনা উযর (অজুহাত ছাড়াই) ছেড়ে দিয়েছেন।
মুস্তাহাব কাকে বলে?
মুস্তাহাব: এটি এমন আমল (কাজ) যা করা উত্তম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও কখনও সেই আমল করেছেন এবং কখনও তা ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
অর্থাৎ কখনও করেছেন এবং কখনও ছেড়েও দিয়েছেন।
মুস্তাহাব আদায় করলে সাওয়াব (নেকি) পাওয়া যায় এবং না করলে কোনো গুনাহ বা সাস্তি হয় না।
Foroz Wajib Sunnat Mustahab Haram Halal Makrooh Mubah kake bole?
হালাল কাকে বলে?
হালাল: কিতাব ও সুন্নাহ (কুরআন ও হাদীস দ্বারা (কোন কিছু করা বা খাওয়া জায়েয) বলে প্রমাণিত হয় তাকে হালাল বলে।
হারাম কাকে বলে?
হারাম: তাকে বলা হয় যা শরিয়ত দ্বারা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ (সীমাবদ্ধ) করা হয়েছে।
অর্থাৎ যে কাজকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছেন তাকে হারাম বলে।
মাকরূহ কাকে বলে?
মাকরূহ: অর্থাৎ অপছন্দনীয় জিনিস।
আর ফুকাহায়ে কেরামগণ কিতাবের মধ্যে এর দুই প্রকার লিখেছেন।
- মাকরূহে-তাহরীমী
- মাকরূহে-তানযীহী
মাকরূহে-তাহরীমী: “তাহরীমি” মনে যা হারামের কাছাকাছি।
অর্থাৎ, “মাকরূহে-তাহরীমি”: শরীয়তের দৃষ্টিতে এমন অপছন্দনীয় কাজকে বলা হয়, যা হারামের কাছাকাছি।
আর যে মাকরূহে-তাহরীমি কাজ করবে সে (আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের রাগ ও অসন্তুষ্টির) তিরস্কারের যোগ্য ও ভাগিদার হবে।
মাকরূহে-তানযীহি: “মাকরূহে-তানযীহি”: এটি এমন অপছন্দনীয় জিনিস যা হালালের কাছাকাছি।
এর মানে এই যে, যে ব্যক্তি এই কাজ করবে সে গুনাহগার তো হবে না, তবে সেই কাজটি ছেড়ে দিলে একটি সওয়াব (নেকি) পাবে।
মুবাহ কাকে বলে?
মুবাহ: এমন কাজ যা হুকুম অনুযায়ী করা এবং না করা দুটোই সমান।
অর্থাৎ এটা করলে কোন সওয়াব (নেকি) নেই এবং ছেড়ে দিলেও কোন গুনাহ নেই।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে আসল হচ্ছে ইবাহাত (মুবাহ) হওয়া।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এগুলো মেনে চলার তৌফিক দান করুন, আমীন।
নামাযের মধ্যে কিভাবে চুরি করা হয়?
আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় পাঠক!
আমার নাম মোঃ নাজামুল হক, আমি একটি ইসলামী মাদ্রাসার শিক্ষক।
আমি মাদ্রাসা শিক্ষার পাশাপাশি অনলাইনে ইসলামিক প্রবন্ধ লিখতে থাকি, যাতে মানুষ সঠিক বিষয় জানতে পারে।
আপনি আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন এবং সঠিক তথ্য থেকে উপকৃত হন।
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে বা আমাদের কোন ভুল সম্পর্কে জানাতে চান, তবে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, জাযাকুমুল্লাহু খাইরন।